মেলা প্রাঙ্গণে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন এফবিসিসিআইর প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রহিম। মুক্ত মঞ্চে মনোজ্ঞ সংগীত সন্ধ্যার মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটবে। এবারের মেলায় ৩৬২টি স্টল ছিল। এদের মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, হংকং ও মালয়েশিয়ার ১১টি প্রতিষ্ঠান এবারের মেলায় অংশগ্রহণ করেছে।
এদিকে মেলার শেষ সময়ে স্টল ও প্যাভিলিয়নগুলোতে নানা অফার আর মূল্য ছাড়ের জোয়ার চলছে। বিক্রেতারা নেমেছেন প্রতিযোগিতায়। ক্রেতা টানতে হাঁকডাক দিয়ে পণ্য বিক্রি করছেন তারা। একটি কিনলে ১০টি ফ্রি, অর্ধেক দাম, আখেরি অফার, মেগা অফার চলছে স্টলে স্টলে। মেলায় সুট, কোট-ব্লেজারের দাম ১ হাজারের নিচে নেমে এসেছে। ৬০০, ৭০০ কিংবা ৮০০ টাকায় দর কষাকষি করে ব্লেজার কিনছেন তরুণরা। কে কার আগে পণ্য বিক্রি করবেন এমন প্রতিযোগিতায় নেমেছে বিক্রেতারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এতদিন যে ব্লেজারের দাম ছিল ২ হাজার টাকা, তাতে ডিসকাউন্ট ছিল ২০ ভাগ। এখন সেই ব্লেজারের দাম লেখা হয়েছে ৩ হাজার টাকা আর ডিসকাউন্ট ধরা হয়েছে ৪০/৫০ ভাগ। ক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়াতে কোনো কোনো স্টলে এই অনুপাতে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। ক্রেতারাও এ লোভনীয় অফার পেয়ে দেদার পণ্য কিনছেন। বাণিজ্য মেলায় বেশি মূল্যে পণ্য বিক্রি, বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার প্রক্রিয়া করা ও মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় ও মেয়াদ মোড়কে মূল্যবিহীন পণ্য বিক্রি করার অপরাধ অব্যাহত রয়েছে।
আবার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও চলমান রেখেছে।
ক্রেতা-দর্শনার্থীদের ভিড়ে মেলায় যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তরুণ-তরুণীদের পদচারণায় মেলা প্রাঙ্গণ জমজমাট হয়ে ওঠে। মেলার আশপাশে ছিল লোকে লোকারণ্য। মেলা ঘিরে সব স্টল, মিনি প্যাভিলিয়ন ও প্যাভিলিয়নে ভিড় আর বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে। শেষ মুহূর্তে মূল্য ছাড়ে উৎসবমুখর পরিবেশে কেনাবেচা হয়েছে। তাতে আয়োজক ও বিক্রেতারা খুশি।
লোভনীয় অফার দিয়ে মেলায় পণ্য বিক্রির জাল পাতে কতিপয় প্রতারকচক্র। বিক্রি বাড়াতে অফারের নামে তারা ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করে। আর অসচেতন ক্রেতারাও না বুঝে তাদের পণ্য কিনতে ঝুঁকে পড়েন। অনেকেই এসব পণ্য কিনে প্রতারিত হয়েছেন। নিম্নমানের পণ্যে বিদেশি ও ব্র্যান্ডের পণ্যের স্টিকার লাগিয়ে বিক্রি করা হয়। কোনো কোনো স্টলের কিছু পণ্যের মোড়কে মূল্য ছিল না। যারা ভোক্তা অধিকার আইন অমান্য করে অনৈতিকভাবে ব্যবসা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কোনো ভোক্তা সরাসরি মেলায় লিখিত অভিযোগ করলে তাৎক্ষণিক তা নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
এবারের মেলায় রক্তাত্ত জুলাই-আগস্ট বিপ্লব ও বিপ্লবীদের আত্মত্যাগকে স্মরণ রাখার জন্য জুলাই চতুর, ছত্রিশ চত্বর এবং ইউথ প্যাভিলিয়ন নামে তিনটি পৃথক স্টল দেওয়া হয়েছে। এখানে জুলাই বিপ্লবের নানা স্লোগান, গ্রাফিতি এবং বাণী প্রদর্শন করা হয়েছে। সব শ্রেণির মানুষ সেগুলো গভীর আগ্রহের সঙ্গে পরিদর্শন করে। এছাড়া এবারে বাণিজ্য মেলায় সিনিয়র সিটিজেন কর্নার, সোর্সিং জোন, উইমেন এন্টারপ্রেনিওর কর্নার এবং শিশু পার্ক মেলাকে বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত করে তোলে।