আমার মা ও ছয় ভাইবোনকে পুড়তে দেখেছি

আরিফুল ইসলাম , প্রকাশ:29 মে 2025, 03:07 দুপুর
news-banner

সিবিসি নিউজ ,আলজাজিরা, সিবিসি : রাত গভীর। হঠাৎই শত শত মানুষের আশ্রয় কেন্দ্র স্কুলটি পরিণত হয় জলন্ত মৃত্যুকূপে। সে আগুনের মধ্য দিয়েই কোনো রকমে বেঁচে ফেরে সাত বছরের ছোট্ট মেয়ে ওয়ার্দ শেখ খলিল। আগুনের লেলিহান শিখার মাঝে মেয়েটির ক্লাস রুম থেকে বের হওয়ার সেই করুন দৃশ্যটি সোমবার ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

‘মিসাইলটা আমাদের ওপরই পড়ল। স্কুলটা আগুনে জ্বলে উঠল। আর চোখের সামনে আমি আমার মা ও ভাইবোনকে পুড়তে দেখেছি’-মঙ্গলবার হাসপাতালের বিছানায় বসে চাচা ইয়াদ মুহাম্মদ আল শিক খলিলকে এমন বিভীষিকাময় পরিস্থিতির কথা জানায় ওয়ার্দ। রোববার মধ্যরাতে আশ্রয়স্থল হিসাবে ব্যবহƒত ফাহমি আল-জারজাওয়ি স্কুলে একের পর এক বোমা নিক্ষেপ করে ইসরাইলি যুদ্ধবিমান। আগুন ধরে যায় ক্লাসরুমগুলোতে। মুহূর্তের মধ্যে মৃত্যু ঘটে অন্তত ৩৬ জনের। যাদের মধ্যে ১৮ জন শিশু ও ৬ জন নারী। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কুলে হামলায় ওয়ার্দের মা ও পাঁচ (আল-জাজিরা ছয় বলেছে) ভাইবোন নিহত হয়েছেন। ভাইবোনদের বয়স ২ থেকে ১৮ বছর। তারা সবাই হামলার সময় ঘুমিয়ে ছিলেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওয়ার্দের বাবা ও এক ভাই গুরুত্বর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আগুনের ভেতর থেকে ওয়ার্দকে হেঁটে বেরিয়ে আসতে দেখে উদ্ধারকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন বলে জানিয়েছে।

ওয়ারদের চাচা ইয়াদ বলেছেন, ‘আমি রাতের বেলায় খবর পেলাম আমার ভাইয়ের পরিবার যে স্কুলে ছিল সেটি বোমায় উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি ছুটে যেতে চাইলেও পারিনি। কারণ চারপাশে তখনো গোলাবর্ষণ চলছিল। অন্ধকারে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না।’ ভোরে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখানে যা দেখেন, তা ছিল এক বিভীষিকাময় দৃশ্য-ধোঁয়ায় ভরা বাতাস, পোড়া রক্তের গন্ধ, চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা দেহের খন্ডাংশ। ইয়াদ বলেছেন, আমরা প্রথমে লাশ খুঁজছিলাম। পরে কেবল দেহের অংশ খুঁজতে থাকি। হাত, পা, আঙুল, পোড়া কাপড় দেখে লাশ শনাক্ত করার চেষ্টা চলছিল সেখানে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। তাদের হামলার অন্যতম লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে স্কুল ও হাসপাতালগুলো। এর আগে গত বছরের আগস্টে গাজা নগরীর আল-তাবিন স্কুলে বড় হামলা চালিয়েছিল বর্বর সেনারা।

মুল্যবান মন্তব্য করুন