আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মোঃ জিয়াউল করিম বলেছেন, ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বাংলাদেশের আইনাঙ্গনের এক ঐতিহাসিক নাম। তিনি আইনি সেবা দিয়ে মানুষের সহযোগিতা করেছেন। সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা দিয়ে আইনাঙ্গনে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি যে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন জাতি তা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। আজ যখন তার সবচাইতে বেশি প্রয়োজন ছিল, সেসময় তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। তিনি মানুষের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন। তার জীবন ও কর্ম থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।
১৯ মে সোমবার বিকালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের শফিউর রহমান মিলনায়তনে মরহুম ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক স্মরণে বাংলাদেশ লইয়ার্স কাউন্সিলের উদ্যোগে আয়োজিত দোয়া ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন লইয়ার্স কাউন্সিলের সভাপতি এড. জসিম উদ্দিন সরকার। লইয়ার্স কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেলের এড. মতিউর রহমান আকন্দের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিচারপতি ড. মোঃ আবু তারিক ও বিচারপতি এমদাদুল হক আজাদ। আরও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র এড. জয়নাল আবেদিন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার বেলায়েত হোসেন, ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের দুই পুত্র ব্যারিস্টার ইমরান ও ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী, এড. ইউসুফ আলী, এড. মোঃ শিশির মনির, এড. গিয়াস উদ্দিন মিঠু, এড. রেজাউল করিম খন্দকার, এড. জালাল উদ্দিন, এড. এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, এড. মোঃ মুহাম্মাদ হোসেন লিপু ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর জনাব নূরুল ইসলাম বুলবুল প্রমুখ।
অন্যান্য আলোচকবৃন্দ ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাকের আইনাঙ্গনে বলিষ্ঠ ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। বক্তারা বলেন, তিনি পেশাগত জীবনে কখনো অনৈতিক ও মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করেননি। অত্যন্ত সততা, যুক্তি ও রেফারেন্স দিয়ে তিনি বিচারপতিদের সহযোগিতা করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত নির্লোভ ব্যক্তি। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি ইসলামী অনুশাসন মেনে চলার ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর ছিলেন। তিনি কখনো নৈতিকতার সাথে আপোষ করেননি।
তার পুত্রগণ পিতার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। ব্যারিস্টার এহসান এ সিদ্দিকী বলেন, তিনি ২৬ ডিসেম্বর দেশে প্রত্যাবর্তন করার পর এটিএম আজহারুল ইসলামের মামলা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আইনি লড়াইয়ের জন্য কোর্টে উপস্থিত হয়েছিলেন। মামলার দ্রুত শুনানির জন্য তিনি কোর্টে মেনশন করেছিলেন। অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি মামলার আর্গুমেন্ট ও ঘটনার ওপর ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। তিনি নিজ হাতে মামলার গ্রাউন্ডস এর ওপর নোট তৈরি করেন। আপিল বিভাগে এ মামলার শুনানির এক দিন আগেই তিনি দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন। ব্যারিস্টার এহসান তাঁর পিতার আত্মার মাগফিরাতের জন্য দেশবাসীর দোয়া চান।
ব্যারিস্টার রাজ্জাকের স্মরণ সভায় বিপুল সংখ্যক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।