নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে জনতার হাতে অবরুদ্ধ নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের এক নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে ছাত্রদল নেতা এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় এক ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হন। পরে উত্তেজিত জনতা পিটুনি দিয়ে ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রূপগঞ্জ উপজেলার মাঝিপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আটক ছাত্রলীগ নেতার নাম সাব্বির হোসেন খোকা। তিনি ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। অন্যদিকে তাঁকে ছাড়িয়ে আনতে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানের ভাতিজা জাহিদুল বাবুর বিরুদ্ধে। বাবু জেলা ছাত্রদলের সাবেক প্রচার সম্পাদক।
গুলিবিদ্ধ যুবকের নাম মো. মামুন ভূঁইয়া। তিনি মাঝিপাড়া এলাকার মান্নান ভূঁইয়ার ছেলে ও স্থানীয় এলপিজি সিলিন্ডার গ্যাস ব্যবসায়ী। মামুনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, স্থানীয় সাবেক মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন খোকা। গত ৫ আগস্টের পর তাঁর নেতৃত্বে ঝটিকা মিছিল বের করা হয়। আজ সকালে মাঝিপাড়া এলাকায় খোকাকে দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন।
এদিকে আটকে রাখার খবর জানতে পেয়ে দলবল নিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমানের ভাতিজা জায়দুল বাবু খোকাকে ছাড়িয়ে নিতে স্থানীয় জনতার দিকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন ব্যবসায়ী মামুন ভূঁইয়া। এ ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে ধাওয়া দিলে বাবু পালিয়ে যান। পরে ছাত্রলীগ নেতা খোকাকে পিটুনি দেয় উত্তেজিত জনতা। খোকাকে রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জেলা ছাত্রদলের সাবেক এক নেতা বলেন, ভুলতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির হোসেন খোকা কয়েক দিন আগে জায়দুল বাবুর বলয়ে যোগ দেন। তিনি বিএনপির রাজনীতিতে ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। সেই কারণেই বাবু এসে তাঁকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা চালান।
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ঘটনা শোনার পরপরই আমি খোঁজ নিয়েছি। এটা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আমি বাবুকে জিজ্ঞেস করেছি। সে এই ঘটনায় জড়িত না বলে দাবি করেছে। মুড়াপাড়া ইউনিয়নের কিছু লোকজন এসে ঝামেলা করেছে।’
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, গুলিবিদ্ধ যুবককে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। গণপিটুনির শিকার খোকাও আহত অবস্থায় পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। অভিযুক্ত বাবু পলাতক থাকায় তাঁকে খোঁজা হচ্ছে। তবে এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।