site-logo

www.bdedition.com

(অনলাইন বাংলা নিউজ পোর্টাল)

আইন ও আদালত
হাসিনাকে দিয়েই শুরু গণহত্যার বিচার
প্রকাশিত: মেহেদী হাসান আনাস, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার 12 মার্চ 2025, 05:29 বিকাল
হাসিনাকে দিয়েই শুরু গণহত্যার বিচার
news-banner

ঢাকা অফিস:

ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে হত্যা, গণহত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলার বিচার আনুষ্ঠানিক (অভিযোগ দাখিল ও গঠন, সাক্ষ্যগ্রহণ, যুক্তিতর্ক) শিগগির শুরু হতে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সংঘটিত গুমের ঘটনা নিয়ে অভিযোগেরও বিচার হবে। আগামী এক মাসের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হবে। বিচারকাজ শুরুর পর আগামী ছয় মাসের মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরও অনেকের রায়ের প্রত্যাশা করছে প্রসিকিউশন।


আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনের আওতায় গঠিত তদন্তকারী সংস্থা ও প্রসিকিউশনের সমন্বয়ে বৈঠকে গত সপ্তাহে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় চিফ প্রসিকিউটর ও তদন্তকারী সংস্থার প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় চলতি মাসের মধ্যে তদন্ত সংস্থাকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন তৈরিতে এক-তৃতীয়াংশ কাজ বাকি।


তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ বছরে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পদে থেকে নানা ধরনের অপরাধের প্রধান হিসেবে বিচারের প্রথম ধাপে শেখ হাসিনাকে অভিযুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার সরাসরি নির্দেশদাতা হিসেবেও থাকছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার পৃথক দুটি প্রতিবেদন শিগগিরই প্রসিকিউশন বিভাগে দাখিল করবে তদন্তকারী সংস্থা।


সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, তদন্ত প্রতিবেদনে গত ১২ ফেব্রুয়ারি জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশন দপ্তরের তথ্যানুসন্ধানে প্রকাশিত ১২৭ পৃষ্ঠার জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হচ্ছে। পাশাপাশি দেশীয় মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’-এর কয়েকটি প্রতিবেদনও সংযুক্ত করা হবে। প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল। বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্বিচারে মারণাস্ত্র দিয়ে গুলি, গ্রেপ্তার, নির্যাতন, চিকিৎসা পেতে বাধা দেওয়ার মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে সরকারের বিরুদ্ধে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে আন্দোলনকারীদের ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগ করার সরাসরি নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী।


গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এর পর তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকাসহ সারাদেশে থানা ও আদালতে হত্যা, গণহত্যা, হত্যাচেষ্টাসহ মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগে মামলা করেন ভুক্তভোগীরা। এখন পর্যন্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে হত্যাসহ তিন শতাধিক মামলা এবং তাঁর মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, এমপি, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা, পুলিশ বাহিনীর সদস্য, সরকারের সাবেক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও নৃশংস হত্যার অভিযোগে মামলা করা হয়।


জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের সময় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তাঁর সরকারের মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এর মধ্যে গণহত্যার অভিযোগে শেখ হাসিনাকে একক আসামি করে একটি মামলা এবং শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হকসহ ৪৬ জনকে আসামি করে অপর মামলাটি করে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বিভাগ।