site-logo

www.bdedition.com

(অনলাইন বাংলা নিউজ পোর্টাল)

জাতীয়
স্বস্তি ফিরেছে বাজারে, কিছুটা বেড়েছে মাছ-সবজির দাম
প্রকাশিত: মেহেদী হাসান আনাস, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার 05 এপ্রিল 2025, 10:47 দুপুর
স্বস্তি ফিরেছে বাজারে, কিছুটা বেড়েছে মাছ-সবজির দাম
news-banner

ঢাকা অফিস :  


পবিত্র ঈদুল ফিতরের সময় বৃদ্ধি পাওয়া গরু ও মুরগির মাংসের দাম কিছুটা কমেছে। তবে সবজি ও মাছের দর কিছুটা বেড়েছে। পণ্যের সরবরাহ কম থাকার কারণেই মূলত বেড়েছে মাছ ও সবজির দাম। ঈদকে কেন্দ্র করে অনেক ব্যবসায়ী ঢাকা ছেড়েছেন। ফলে পণ্যের সরবরাহ কমেছে। তবে তারা ধীরে ধীরে আবার ঢাকা ফিরতে শুরু করেছেন।


আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ী, শ্যামবাজার এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুরগি ও গরুর মাংসের দাম কমেছে। আবার কিছু সবজির সরবরাহ কমায় সেগুলোর দাম বেড়েছে। বাজারে মাছের সরবরাহ কিছুটা কম থাকায় কিছু মাছের দামও বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে চিংড়ির দাম। বিক্রেতারা বলছেন, এখনো বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানে ঈদের ছুটি থাকায় অনেক মানুষ ঢাকায় ফেরেননি। এ কারণে বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি কম থাকায় বেচাকেনাও কম। তবে রোববার থেকেই বাজারের পুরোনো চিত্র দেখা যেতে পারে।


জানা গেছে, ঈদের আগে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা, এখন তা কমে নেমেছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। সোনালি মুরগি কেজিপ্রতি ২৮০ থেকে ৩১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা ঈদের আগে ছিল ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা। গরুর মাংসের দাম ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায় নেমে এসেছে, যেখানে ঈদের আগে তা ছিল ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা।


কারওয়ান বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা আবুল হোসেন বলেন, এখনো অনেক মানুষ ঢাকায় ফেরেননি। ঈদের পর শহর অনেক ফাঁকা। মানুষ কম থাকায় চাহিদা কম, তাই দামও কিছুটা কমিয়ে বিক্রি করছেন। ঈদের পর সপ্তাহখানেক তাদের ব্যবসা খুবই কম হয়। ঈদের পর পর মানুষের মাংসের প্রতি খুব বেশি আগ্রহ থাকে না। যে কারণে বেচাকেনা খুবই কম হয়। এই সময়ে ক্রেতাদের চাহিদা যেমন কম থাকে, পাইকারি বাজারেও দাম কিছুটা কম থাকে।


বাজারের মাংসের চাহিদা কম হলেও কদর বেড়েছে মাছের। ফলে প্রায় সব ধরনের মাছেই কিছুটা বাড়তি দাম যোগ হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ২০০ টাকায়, যা অন্যান্য সময়ে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়ও পাওয়া যায়। তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত, সরপুঁটি ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি। চাষের কই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা। প্রতি কেজি বড় রুই বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, মাঝারি রুই ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। কাতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। তবে নদীর মাছের সরবরাহ কম থাকায় বাজারে বেড়েছে চিংড়ি, শিং, ট্যাংরা, শোল ও পুঁটি মাছের দাম। চাষের চিংড়ি কেজি ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকা আর নদীর চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায়।


মাহমুদুল হাসান নামে এক মাছ বিক্রেতা বলেন, ঈদে মাংস খেয়ে এরপর বেশির ভাগ মানুষ মাছ খোঁজে। যে কারণে বাজারে এক ধরনের সংকট তৈরি হয়। সে তুলনায় বাজারে সরবরাহ কম থাকায় দামটাও বেড়ে যায়। ঈদের ছুটির কারণে মাছ উঠেছে কম, এখনো গ্রাম থেকে পুরো সরবরাহ আসেনি।

ঈদের পর বাজারে কাঁচামরিচ, টমেটো, পেঁপে, শসা, লেবুসহ অন্যান্য সবজির দাম বেড়েছে। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পেঁপে ৬০ টাকা, শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ১২০ টাকা কেজি। এ ছাড়া প্রতিটি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৮ থেকে ১০ টাকায়।


সবজি কিনতে আসা ছামাদ মিয়া বলেন, ‘বাজারে বেশির ভাগ সবজির দাম কমেছে। এতে ক্রেতারা স্বস্তিতে রয়েছেন। তবে যৌক্তিক কারণ ছাড়াই যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতারা। এতে বিপাকে পড়েন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ক্রেতারা। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাজারে প্রশাসনের নিয়মিত অভিযান চালানো প্রয়োজন।’ সবজি বিক্রেতা মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমি সিন্ডিকেট করি না। বাজারে আশপাশের এলাকা থেকে প্রচুর সবজি আসছে। ফলে অনেক সবজির দাম কমেছে।’


শ্যামবাজার এলাকার বাসিন্দা মীর হোসেন বলেন, ঈদের পর ব্রয়লার মুরগির দাম একটু কমেছে। কমেছে বললে ভুল হবে বরং যে দাম বেড়েছিল সেটা থেকে কিছুটা কমেছে; কিন্তু মাছ ও সবজি এখন আর মধ্যবিত্তের নাগালে নেই। একটা মাঝারি লাউ ৭০ টাকা, চারটি লেবু ৪০ টাকা।


এদিকে অপরিবর্তিত অবস্থায় ব্রয়লার মুরগি ২১০, সাদা কক ২৯০, লাল কক ৩০০ টাকা, গরুর মাংস ৭৫০ ও খাসির মাংস ১ হাজার ১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস ছালাম বলেন, ‘ঈদের পর বাজারে এখনো অভিযান শুরু হয়নি। তবে বাজারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। ঢাকার বাজারগুলোতে কয়েক দিনের মধ্যে আবারও অভিযান শুরু করা হবে।’