site-logo

www.bdedition.com

(অনলাইন বাংলা নিউজ পোর্টাল)

খেলা
রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজে ফিরলো বাংলাদেশ
প্রকাশিত: আরিফুল ইসলাম 05 জুলাই 2025, 11:26 রাত
news-banner
বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ঘুরে দাঁড়ালো বাংলাদেশ। বাঁচিয়ে রাখলো সিরিজ জয়ের স্বপ্ন। হার দিয়ে সিরিজ শুরু হলেও দ্বিতীয় ম্যাচেই পেল জয়ের দেখা। সব মিলিয়ে ৭ ম্যাচ পর কোনো ওয়ানডে জিতলো বাংলাদেশ।

তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শনিবার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। কলম্বোতে স্বল্প রানের রোমাঞ্চকর এই ম্যাচে ১৬ রানের জয় তুলে নিল টাইগাররা। তাতে সিরিজে ফিরলো ১-১ সমতা।

টসে জিতে আগে ব্যাট করে ৪৫.৫ ওভারে ২৪৮ রান তুলে বাংলাদেশ। জবাবে শ্রীলঙ্কা ইনিংস শেষ করে ৪৮.৫ ওভারে ২৩২ রানে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবার ৫ উইকেটের দেখা পান তানভীর।

লক্ষ্য তাড়ায় দ্বিতীয় ওভারেই পাথুম নিশানকার (৫) উইকেট হারায় লঙ্কানরা। তবে একাই ইনিংস এগিয়ে নিতে থাকেন কুশল মেন্ডিস। নিশান মাদুষ্কাকে একপ্রকার দর্শক বানিয়ে রান বাড়াতে থাকেন তিনি।

দ্বিতীয় উইকেট জুটির ৪৪ বলে ৬৯ রানের মাঝে কুশালের ব্যাটেই রান ২৫ বলে ৫৩। নিশান আউট হন ২৪ বলে ১৭ রান করে। এরপর ১১.৫ ওভারে কুশালকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন তানভীর।

আগের ওভারেই ১৭ রান দেয়া তানভীর, দারুণ প্রত্যাবর্তন করেন এই ওভারে। মাত্র ১ রান দিয়ে ফেরান কুশালকে। ফেরার আগে কুশালের ব্যাটে আসে ৩১ বলে ৫৬ রান। মেন্ডিস ফিরতেই ধস নামে লঙ্কানদের ইনিংসে।

দলীয় ৯৯ রানে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান চারিথ আসালাঙ্কাকে ফেরান শামীম পাটোয়ারী। ১৭ বলে মাত্র ৬ রান করেন লঙ্কান অধিনায়ক। যদিও কামিন্দু মেন্ডিস থিতু হবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

৫১ বলে ৩৩ রান নিয়ে তানভীরের শিকার হন তিনি। এরপর ১০ বলে ১ রান করে তানভীরেরই শিকার হয়ে ফেরেন দুনিথ ভেল্লালেগেও। ২৯.৪ ওভারে ১৩২ রানে ৬ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।

সেখান থেকে দলকে টানেন জেনিথ লিয়ানগে ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। হাসারাঙ্গাকে ১৩ রানেই থামিয়ে দেন মেহেদী মিরাজ। এরপর থিকসানাকে (২) ফিরিয়ে ৫ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন তানভীর।

৩৮.৩ ওভারে ১৭০ রানে শ্রীলঙ্কার ৮ উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশ যখন জয়ের স্বপ্নে বিভোর, তখন জ্বলে উঠেন লিয়ানগে। ৭৫ বলে ৫০ পূর্ণ করে রান বাড়ানোর দিকে মন দেন তিনি। হয়ে উঠেন আগ্রাসী।

একটা সময় কাঁপিয়ে দেন বাংলাদেশকে, তবে শেষ রক্ষা হয়নি। যখন জয়ের জন্য ১৬ বলে প্রয়োজন ২১ রান, তখন মোস্তাফিজের বলে তাকেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। শেষ হয় তার ৮৫ বলে ৭৮ রানের লড়াই।

এরপর ৪৮.৫ ওভারে ৩১ বলে ১৩ রান করা চামিরাকে বোল্ড করে জয় নিশ্চিত করেন তানজিম সাকিব। সব মিলিয়ে জোড়া উইকেট নেন তিনি। তবে জয়ের নায়ক তানভীর, ৩৯ রানে ৫ উইকেট নেন তিনি।

এর আগে ব্যাট হাতে তিন অংকে পৌঁছানোর আগেই জোড়া উইকেট হারালেও শুরুটা ভালোই পেয়েছিল বাংলাদেশ। ১৬ ওভারেই আসে দলীয় সেঞ্চুরি। পারভেজ ইমন তুলে নেন ফিফটি।

তবে ইমনকে ফিরিয়েই বড় ধাক্কা দেন হাসারাঙ্গা। ফেরার আগে দারুণ ব্যাট করছিলেন পারভেজ ইমন। বলের সাথে পাল্লা দিয়ে করছিলেন রান। মাত্র ৪৬ বলে পূরণ করেন ফিফটি। ৬৯ বলে ৬৭ করে আউট হন তিনি

অবশ্য ইমনকে রেখে ২.৩ ওভারেই ফেরেন আরেক ওপেনার তানজিদ তামিম। ১০ রানেই থামে উদ্বোধনী জুটি। ১১ বলে ৭ রান করে আসিথা ফার্নান্দোর বলে উইকেট কিপারকে ক্যাচ দেন তিনি।

এরপর থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে না পারার হতাশা নিয়ে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ১৯ বলে ১৪ রান করে আসালাঙ্কার শিকার হন তিনি। তবে চারে নামা হৃদয়কে নিয়ে স্কোর তিন অংকে পৌঁছান তামিম।

তামিম ফেরার পর অধিনায়ক মেহেদী মিরাজ মাঠে আসেন, তবে তিনি দায়িত্ব নিতে পারেননি। ১০ বলে ৯ রানেই থামেন। শামীম অবশ্য থিতু হয়েছিলেন, কিন্তু ২৩ বলে ২২ রানেই শেষ হয় তার ইনিংস।

তবে এরপর দলের হাল ধরেন হৃদয় ও জাকের। দেখেশুনেই ব্যাট করছেন দু'জনে। ৪৫ রানের জুটি গড়ে উঠে তাদের মাঝে। তবে আসিথা আর বড় হতে দেননি যুগলবন্দী। থামান ৪০ বলে ২৪ করা জাকেরকে।

অন্যদিকে এক প্রান্ত আগলে রেখে ৬৮ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন তাওহীদ হৃদয়। কিন্তু পরের ওভারে রান আউট হয়ে যান তিনি। তানজিম সাকিবে সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে থামতে হয় তাকে। স্কোর ২১২/৭।

তাতে আড়াই শ' রানের সংগ্রহ পাবার স্বপ্ন মলিন হয়ে যায়। তবে সাকিব তার চেষ্টা করেন। যদিও অপরপ্রান্ত থেকে সহায়তা না পাওয়ায় আড়াই শ' পূর্ণ করতে পারেননি, তবে ২৪৮ রান পর্যন্ত নিয়ে দেন দলকে।

২টি করে চার-ছক্কায় ২১ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত থাকেন তানজিম সাকিব। শ্রীলঙ্কার পক্ষে আসিথা ফার্নান্দো নেন ৪ উইকেট। হাসারাঙ্গার শিকার ৩টি।