পাপনের বিরুদ্ধে মামলা করার পথে দুদক

আরিফুল ইসলাম , প্রকাশ:06 মে 2025, 07:27 বিকাল
news-banner
আয়ের বাইরে বিপুল সম্পদ অর্জন ও সন্দেহজনক ব্যাংক লেনদেনের অভিযোগে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক সভাপতি এবং সাবেক সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের ছেলে পাপনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি প্রায় ২০ কোটি ৭ লাখ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ গড়ে তুলেছেন। এর পাশাপাশি তাঁর ২০টি ব্যাংক হিসাবে ৭৪২ কোটি ৭৩ লাখ টাকার লেনদেনকে 'সন্দেহজনক' হিসেবে চিহ্নিত করেছে দুদক, যা ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত বলে দাবি সংস্থাটির।

সোমবার দুদকের উপপরিচালক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, "নাজমুল হাসান পাপনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।"

শুধু পাপনই নয়, তাঁর স্ত্রী রোকসানা হাসানের বিরুদ্ধেও আলাদা মামলার সুপারিশ করা হয়েছে। রোকসানার বিরুদ্ধে ১২ কোটি টাকার অঘোষিত সম্পদ এবং ১১টি ব্যাংক হিসাবে ৪৯ কোটি ৩২ লাখ টাকার লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিসিবির পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিকের বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগে মামলা সুপারিশ করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ৩ কোটি ৭০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য।

দুদক জানিয়েছে, এই মামলার আওতায় পাপন ও মল্লিক পরিবারের আরও পাঁচজন নিকটাত্মীয়কে সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার নির্দেশনার সুপারিশ করা হয়েছে।

তালিকায় আছেন পাপনের মেয়ে রুশমিলা রহমান (অহনা), ছেলে রাফসান রহমান, মেয়ে সুনেহরা রহমান (তন্নি), তন্নির স্বামী রাকিন আল মাহমুদ (বেক্সিমকো ফার্মার কর্মকর্তা) এবং মল্লিকের স্ত্রী সুলতানা নিঝুম।

দুদকের অনুসন্ধান এখানেই থেমে নেই। সংস্থাটি জানিয়েছে, পাপনের বিরুদ্ধে আরেকটি তদন্ত চলছে, যেখানে অভিযোগ রয়েছে তিনি বিসিবি ও সরকারি অর্থ অপব্যবহার করে দেশ-বিদেশে পরিবারের নামে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন। অভিযোগ রয়েছে, হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচারেও তাঁর সম্পৃক্ততা রয়েছে, যেখানে বেক্সিমকোর কিছু কর্মকর্তাও যুক্ত।

গত ১৮ মার্চ সরকারের পরিবর্তনের পর দুদক আনুষ্ঠানিকভাবে পাপনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে। একই মাসে কমিশনের উপপরিচালক সাইদুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করা হয়।

এর আগে, ১৬ মার্চ আদালতের নির্দেশে নাজমুল হাসান পাপন, তাঁর স্ত্রী, দুই মেয়ে ও ছেলের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

সবশেষ ২৮ এপ্রিল, তদন্তের অংশ হিসেবে দুদক বিসিবির কাছে ২৭ ধরনের নথি ও তথ্য চেয়ে চিঠি দেয়, যেগুলো সাত কর্মদিবসের মধ্যে সরবরাহের অনুরোধ করা হয়।

মুল্যবান মন্তব্য করুন